HomeদেশGlobal Warming: বিশ্ব উষ্ণায়ন মোকাবিলায় বর্তমানে ভারতের কি অবস্থান?

Global Warming: বিশ্ব উষ্ণায়ন মোকাবিলায় বর্তমানে ভারতের কি অবস্থান?

২০৩০ সালের মধ্যে ৫০০ গিগাওয়াটের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করার পথে রয়েছে।

তারকেশ্বর TV: ২০২১ সালের নভেম্বরে গ্লাসগোতে সিওপি২৬ জলবায়ু আলোচনায় ভারত বলেছিল ২০৭০ সালের মধ্যে নেট-জিরো emission অর্থাৎ সম্পূর্ণ দূষণ মুক্ত হবার লক্ষমাত্রা নিয়ে চলছে। যদিও সময় অনেক আছে।

নতুন ও পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি মন্ত্রক জানিয়েছে যে ভারত ২০২৩ সালের মধ্যে ১৮০ গিগাওয়াটেরও বেশি New and Renewable Energy বা পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি ক্ষমতা স্থাপন করেছে এবং ২০৩০ সালের মধ্যে ৫০০ গিগাওয়াটের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করার পথে রয়েছে।

ব্ল্যাক কার্বন এমন একটি পদার্থ যা বাতাসে নির্গত হয় যখন বায়োমাস বা জীবাশ্ম জ্বালানী সম্পূর্ণরূপে দহন হয় না। এটি গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ে বা বিশ্ব উষ্ণায়ন এর জন্য দায়ী ত বটেই, তার সাথে মানুষের স্বাস্থ্যের জন্যও মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করে। গবেষণায় দেখা গেছে যে কালো কার্বনের সংস্পর্শে এলে হৃদরোগের সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়, প্রসবের সময় জটিলতা দেখা দেয় এবং অকাল মৃত্যুও অস্বাভাবিক কিছু না।

ভারতে, বেশিরভাগ কালো কার্বন নির্গত হয় গরুর গোবর বা খড়ের মতো রান্নার উনানে বায়োমাস পোড়ানো থেকে।

২০১৬ এর একটি সমীক্ষাতে পাওয়া গেছে যে ভারতের ৪৭% কালো কার্বন শুধুমাত্র জনবসতি এলাকা থেকেই নির্গত হয়। শিল্প থেকে ২২%, যানবাহন থেকে ১৭%, অপ্রয়োজনীয় জিনিস পোড়ানো থেকে ১২% এবং অন্যান্য উৎস থেকে ২%। যদিও বিগত ১০ বছরে শিল্প ও পরিবহন থেকে কালো কার্বন নির্গমন কমানোর চেষ্টা সফল হয়েছে। তবুও জনবসতি এলাকা এখনও একটি উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

২০২৪ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত, ভারতে প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা যোজনা (PMUY) সফলভাবে দারিদ্র্যসীমার নীচে ১০ কোটিরও বেশি পরিবারকে বিনামূল্যে LPG গ্যাস (LPG) সংযোগ সরবরাহ করেছে। গ্রামীণ ও দরিদ্র পরিবারগুলিতে দূষণ মুক্ত জ্বালানী ব্যাবহার এবং গোবর ঘুঁটে জাতীয় জ্বালানীর ব্যবহার কমাতে  ২০১৬ সালের মে মাসে প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা যোজনা সূচনা হয়। এই প্রকল্পটি  সঠিক ভাবে বাস্তবায়ন করার ফলে দূষণ অনেকটাই কমানো গেছে।

তবে, আরটিআই তথ্য অনুসারে, ২০২২-২৩ সালের মধ্যে উজ্জ্বলা যোজনা সুবিধাভোগীদের ২৫% অর্থাৎ ২.৬৯ কোটি উপভোক্তা – হয় কোনও এলপিজি রিফিল ব্যবহার করেননি, অথবা কেবলমাত্র একটি ব্যবহার করেছেন। এর থেকে স্পষ্ট বোঝা যায় যে তারা রান্নার জন্য কাঠ কয়লা ইত্যাদির উপর সম্পূর্ণরূপে নির্ভর করে চলেছে।

২০২৩ সালের আগস্টে দ্যা হিন্দুর একটি রিপোর্টে বলা হয় যে গড় উজ্জ্বলা যোজনা সুবিধাভোগী পরিবারগুলি বছরে কেবল ৩.৫-৪ টি এলপিজি সিলিন্ডার ব্যাবহার করে। যেখানে উজ্জ্বলা যোজনার গ্রাহক নন এমন পরিবার গুলি বছরে ৬ – ৭ টা এলপিজি সিলিন্ডার গ্রহণ করে। ফলে এটা বোঝা যায় যে অর্ধেক উজ্জ্বলা উপভোক্তা এখনও রান্নার জন্য গ্যাস ব্যবহার করেন না। তাই সেখান থেকে প্রচুর পরিমাণে কার্বন নির্গত হয়। যা মহিলা ও শিশুদের স্বাস্থ কে দারুন ভাবে প্রভাবিত করে। বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা এবং অকাল মৃত্যুও ডেকে আনে। এই অঞ্চলগুলির জীবনযাত্রার মানোন্নয়নের প্রাথমিক সমাধান হ’ল রান্নার পরিচ্ছন্ন জ্বালানির যোগান নিশ্চিত করা।

২০২৩ সালের অক্টোবরে, সরকার এলপিজি ভর্তুকি ২০০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা করেছে। এই ভর্তুকি সত্ত্বেও, ক্রমবর্ধমান এলপিজির দামের কারণে ১৪.২ কেজি এলপিজি সিলিন্ডারের দাম প্রায় ৬০০ টাকা রয়ে গেছে। অনেক উজ্জ্বলা সুবিধাভোগী এই দামটিকে খুব বেশি বলে মনে করেন, যেখানে গোবর এবং জ্বালানি কাঠ ‘বিনামূল্যে’ পাওয়া যায়।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ২০২৪ সালের মার্চ মাসে সিলেণ্ডার পিছু আরও ১০০ টাকা কমানোর কথা ঘোষণা করেন, তবে এই ভর্তুকি স্থায়ী হবে না বলে অনেকে মনে করছেন অনেকে।

উজ্জ্বলা যোজনার কার্যকারিতার জন্য একটি বড় বাধা হ’ল এলপিজি বিতরণ নেটওয়ার্কে যথাযথ সংযোগের অভাব, যার ফলে প্রত্যন্ত গ্রামীণ অঞ্চলগুলি সাধারণ কাঠ কয়লার উপর ব্যাপকভাবে নির্ভর করে। আর এই সমস্যার একটি সম্ভাব্য সমাধান হ’ল বায়োমাস কম্পোস্টিংয়ের মাধ্যমে স্থানীয় ভাবে compressed bio-methane (CBM) গ্যাসে উত্পাদন। কারণ compressed bio-methane দূষণ মুক্ত জ্বালানী হিসেবে কাজ করে।

আর তাই স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যা মোকাবিলা এবং দূষণ হীন জ্বালানি ব্যবহারের উঠকর্ষ তা বাড়িয়ে তোলার জন্য ভারতকে অবশ্যই উজ্জ্বলা যোজনার মত প্রকল্প গুলির সঠিক বাস্তবায়নের দিকে পদক্ষেপ নিতে হবে। এমনই জানা যায় দ্যা হিন্দুর রিপোর্ট থেকে।

________

এই মুহূর্তে

আরও পড়ুন