তারকেশ্বর TV: পূর্ব রেলের নির্মাণ দফতরের আধিকারিকরা ফের এসে পৌঁছলেন। বিক্ষোভকারীরা আশাবাদী যে অবশেষে তাদের দাবির সুরাহা হবে। তবে গোঘাটে ‘ভাবাদিঘি জট’-এর কারণে তারকেশ্বর-বিষ্ণুপুর রেল যোগাযোগ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। একই দিনে ভবাদিঘি থেকে পশ্চিম অমরপুরও ঘুরে দেখেন রেলের আধিকারিকরা। আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, সমস্যার সমাধান হবে।
পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার তথা হাওড়ার ডিভিশনাল ম্যানেজার সম্প্রতি ভবদিঘিতে গিয়েছিলেন। দিঘির একাংশ ভরাট করে রেললাইন নির্মাণের বিরোধিতা করে আসছেন স্থানীয় গ্রামবাসী। তাদের দাবি দিঘির উত্তর পাশ বরাবর রেললাইন নির্মাণ করা হোক।
এ দিন পূর্ব রেলের যাবতীয় নির্মাণকাজের পরিকল্পনা এবং সম্পাদনের দায়িত্বে থাকা মুখ্য প্রশাসনিক কর্তা পি কে শর্মার নেতৃত্বে চিফ ইঞ্জিনিয়ার (১) মনোজ খান, ডেপুটি চিফ ইঞ্জিনায়ার কদম সিংহ মিনা প্রমুখ কর্তারা আসায় ভাবাদিঘির মানুষ ভেবেছিলেন, তাঁদের দাবির কথা বিবেচনা করে নতুন করে নকশার পরিকল্পনা হবে। কিন্তু তা হয়নি।
মনোজ খান গ্রামবাসীদের জানিয়ে দেন যে রেললাইনের অ্যালাইনমেন্ট পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। এই খবরে গ্রামবাসীরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন, যার ফলে আলোচনায় মাঝপথে ভেস্তে যায়। ‘দীঘি বাঁচাও’ কমিটির সম্পাদক সুকুমার রায় হতাশা প্রকাশ করে বলেন, “এ বার রেলের নির্মাণ বিভাগের কর্তারা আসছেন শুনে মনে হয়েছিল, সমস্যা মিটবে। কিন্তু তাঁরা আগের নকশা অনুযায়ীই কাজ করতে চান। তারপর আর কথা চালিয়ে লাভ নেই।’’
চিফ ইঞ্জিনিয়ার (১) মনোজ বলেন, “খালি ভাবাদিঘির সমস্যর জন্য আমরা একটা ঐতিহাসিক মুহূর্তের সামনে থমকে আছি। আলোচনার সময় গ্রামবাসীরা সবাই উত্তেজিত হয়ে কথা বলার চেষ্টা করছিলেন। ফলে, আলোচনা বিশেষ এগোয়নি।” গ্রামবাসীকে কী বলতে চেয়েছিল রেল? মনোজ জানান, দিঘির এক প্রান্তে জলের কিছুটা অংশ নিয়ে লাইনটা যাবে। সেই নকশা বদল করা যাবে না। গ্রামবাসীরা জানান যে এর ফলে তাদের জলাশয়ের আকার হ্রাস পাবে। রেললাইনের নকশা পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে বিভাগের একজন প্রকৌশলী ব্যাখ্যা করে বলেন, ইতোমধ্যে দুটি সেতু নির্মাণ করা হয়েছে, একটি ৩০০ মিটার পূর্ব দিকে এবং অপরটি ৩৫০ মিটার পশ্চিমে। বিক্ষোভকারীদের দাবি, মাত্র ৬০০ মিটারের মধ্যে লাইন ১০ থেকে ১২ ডিগ্রি বাঁকা করতে হবে, যা একেবারেই সম্ভব নয়।
এরই মধ্যে পূর্ব রেলের তরফে রাজ্য ও জেলা প্রশাসনের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। তারা রেললাইনের জন্য প্রয়োজনীয় এলাকার চেয়ে বড় একটি জলাশয় নির্মাণের প্রস্তাব দিয়েছে, যদি উপযুক্ত জায়গার ব্যবস্থা করা হয়। এছাড়া কোনো গাছ কেটে ফেললে তার জায়গায় নতুন গাছ লাগানো হবে।
গোঘাট জেলার পশ্চিম অমরপুরের ‘রেল চালাও, গ্রাম বাঁচাও’ কমিটি রেললাইনের ১ কিলোমিটার অংশের নিচু এলাকায় জল নিষ্কাশনের জন্য একটি সেতুর আবেদনে অটল রয়েছে। সম্প্রতি পরিদর্শনে গিয়ে নিকাশি ব্যবস্থা নিয়ে রেলের আধিকারিকরা আলোচনা করলেও সেতু নির্মাণের বিষয়টি সরাসরি তুলে ধরেননি।
আন্দোলন কমিটির উপদেষ্টা ফটিক কাইতি বলেন, আমাদের নিকাশির দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে। তারা নিশ্চিত করেছে যে তারা বাস্তবায়নের পরিকল্পনা করতে পরের শনিবার আবার আসবেন। পূর্ব রেলের চিফ ইঞ্জিনিয়ার জানিয়েছেন, পশ্চিম অমরপুরের সমস্যাটার সমাধান হয় যাবে।
________