স্টেশনের ২৭ দিন
রাহুলের পকেটে তখন মাত্র কয়েক টাকা। একদিকে ক্ষুধার জ্বালা, অন্যদিকে ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তা। দিনের পর দিন স্টেশনে থেকে ক্ষুধা মেটানোর জন্য কেবল চা আর ব্রেডই তার ভরসা। তিনি স্টেশনে বসেই নিজের জীবনের লক্ষ্য ঠিক করেন—যে যাই বলুক, তাকে বড় হতে হবে। মানুষ মজা করত তার অদ্ভুত লুকস এবং সরলতা নিয়ে। কিন্তু রাহুল জানতেন, স্বপ্ন দেখার সাহস থাকলে জীবন বদলানো সম্ভব।
লড়াই শুরু
রাহুল প্রথমে ছোটখাটো কাজ শুরু করলেন। একসময় তিনি থিয়েটারে সুযোগ পেলেন। অভিনয়ের প্রতি তার আগ্রহ ছিল বরাবরই। থিয়েটারে কাজ করতে করতে তার দক্ষতা বাড়তে থাকে। কিন্তু যখন তিনি সিনেমার দিকে এগিয়ে যেতে চাইলেন, তখন তার লুকসের কারণে সবাই তাকে অবজ্ঞা করত। কেউ কেউ বলত, “এই চেহারা নিয়ে তুমি হিরো হতে চাও?” এই কথাগুলো রাহুলকে ভেঙে ফেলতে পারেনি; বরং আরও শক্তি জুগিয়েছিল।
বড় ব্রেক
রাহুলের জীবনে বড় পরিবর্তন আসে যখন একজন প্রযোজক তার অভিনয় দেখে মুগ্ধ হন। সেই প্রযোজক রাহুলকে সুযোগ দেন একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে। যদিও এটি প্রধান চরিত্র ছিল না, তবুও রাহুল নিজের সেরাটা দেন। এরপর একের পর এক সিনেমায় কাজ করতে থাকেন। কিন্তু তখনও তিনি বড় হিট দিতে পারেননি। ৫০-এর কোঠায় পৌঁছে যখন অনেকেই অভিনয় ছেড়ে দেন, রাহুল তখনও চেষ্টা করে যাচ্ছিলেন।
৬৭ বছর বয়সে ব্লকবাস্টার
তারপর আসে সেই দিন। রাহুলের জীবনের সবচেয়ে বড় সুযোগ আসে এক ৩০০ কোটি টাকার বাজেটের সিনেমায়। পরিচালক তার মধ্যে সেই আগুন দেখেছিলেন, যা বাকিদের চোখ এড়িয়ে গিয়েছিল। রাহুল সেই সিনেমায় প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন, এবং তার জীবনের সেরা পারফর্ম্যান্স দেন। সিনেমাটি বক্স অফিসে ৩০০ কোটির বেশি আয় করে। রাহুল রাতারাতি আইকন হয়ে ওঠেন।
অন্তিম বার্তা
রাহুলের জীবন আমাদের শেখায়, কোনো পরিস্থিতি চিরকাল থাকে না। রেলওয়ে স্টেশনে কাটানো ২৭ দিন থেকে শুরু করে ৩০০ কোটি টাকার সিনেমার নায়ক হওয়া পর্যন্ত, তার যাত্রা প্রমাণ করে যে কঠোর পরিশ্রম এবং স্বপ্ন দেখার সাহস থাকলে জীবনের যে কোনো বাধা অতিক্রম করা সম্ভব।
আর গল্পের রাহুল আর কেউ নয়, প্রবাদপ্রতিম অভিনেতা অনুপম খের। যদিও গল্পের প্রয়োজনে কিছু কথা আলাদা ভাবে ব্যবহার করা হয়েছে।
|| সমাপ্ত ||
________