HomeAllAshmika Ranaghat: সেদিন ঠিক কি হয়েছিল?

Ashmika Ranaghat: সেদিন ঠিক কি হয়েছিল?

বিন্দু বিন্দুতেই সিন্ধু হয়!

রানাঘাটের ছোট্ট অস্মিকা দাস। বয়স মাত্র এক বছর, কিন্তু জীবনের সঙ্গে লড়াই শুরু হয়ে গেছে তার জন্মের পর থেকেই। একরত্তি মেয়েটি জানে না, তার প্রতিটা নিঃশ্বাসের জন্য বাবা-মা যুদ্ধ করছেন, জানে না তার জন্য দরজায় দরজায় কড়া নাড়ছেন তাঁরা।

অস্মিকার জন্ম হয়েছিল একদম সুস্থ স্বাভাবিকভাবেই। গোল গোল দু’চোখ ভরে যখন সে তাকাতো, মা লক্ষ্মী আর বাবা শুভঙ্করের প্রাণ ভরে যেত। কিন্তু সেই আনন্দ বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। তিন মাস পর্যন্ত সে বাকি শিশুদের মতোই ছিল— হাত-পা নেড়েছিল, ছোট্ট ছোট্ট হাসিতে ঘর ভরিয়ে তুলেছিল। কিন্তু হঠাৎ করেই কিছু যেন বদলে যেতে থাকল।

সাড়ে তিন মাসের মাথায় লক্ষ্মী লক্ষ্য করলেন, অস্মিকা পা তুলছে না। ঘাড় শক্ত হচ্ছে না, উবু হয়ে বসতে পারছে না। প্রথমে ভাবলেন, হয়তো দেরি হচ্ছে। কিন্তু সময় যত গড়াল, ততই দুশ্চিন্তা বাড়ল। চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতেই জানা গেল ভয়ঙ্কর সত্য— অস্মিকা আক্রান্ত এক বিরল রোগে, যার নাম স্পাইনাল মাসকুলার অ্যাট্রোফি (SMA) টাইপ ১

জীবন বাঁচানোর জন্য ১৬ কোটি টাকার ইনজেকশন

চিকিৎসকরা জানালেন, SMA এমন এক রোগ, যা ধীরে ধীরে শরীরের পেশী ও নার্ভ নিষ্ক্রিয় করে দেয়। হাঁটা-চলা তো দূরের কথা, একসময় নিঃশ্বাস নিতেও কষ্ট হবে অস্মিকার। এই রোগের একমাত্র চিকিৎসা ‘Onasemnogene‐abeparvovec’ নামে একটি জিন থেরাপি ইনজেকশন। কিন্তু সেটি ভারতবর্ষে পাওয়া যায় না। আমেরিকা থেকে আনতে হবে, যার মূল্য প্রায় ১৬ কোটি টাকা!

শুভঙ্কর আর লক্ষ্মী কিছু সময়ের জন্য যেন পাথর হয়ে গিয়েছিলেন। এত টাকা? কীভাবে সম্ভব? কিন্তু এক মুহূর্তের জন্যও হার মানেননি তাঁরা। শুরু হলো এক অসম লড়াই— নিজেদের সর্বস্ব বিক্রি করেও এই টাকা জোগাড় করা সম্ভব নয়, তাই হাত বাড়ালেন সাধারণ মানুষের দিকে।

বাঁচানোর লড়াইয়ে এগিয়ে আসছে মানুষ

ক্রাউড ফান্ডিং-এর মাধ্যমে সংগ্রহ করা হচ্ছে টাকা। অনেকেই এগিয়ে এসেছেন। গায়ক কৈলাশ খের কনসার্ট থেকে অর্থ তুলে দিয়েছেন অস্মিকার চিকিৎসার জন্য। রূপম ইসলামও পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

তবুও এখনো পথ অনেক বাকি। হাতে মাত্র ছ’মাস, এর মধ্যেই ১৬ কোটি টাকা না জোগাড় হলে, অস্মিকার শরীরের পেশী একেবারে নিষ্ক্রিয় হয়ে যাবে। শুভঙ্করবাবু ভাঙা গলায় বললেন,
“এটাই শুধু চাই সক্কলকে, আমার মেয়েটা যাতে বেঁচে থাকতে পারে। সুস্থ হয়ে হাসতে পারে, হাঁটতে পারে, আমাদের ডাকতে পারে।”

আপনার সামান্য সাহায্যই অস্মিকার জীবন বাঁচাতে পারে। বিন্দু বিন্দুতেই সিন্ধু হয়!

বিঃ দ্রঃ – রানাঘাটের ছোট্ট অস্মিকার জটিল রোগের কাহিনী অবলম্বনে লিখিত।

|| সমাপ্ত ||

এই মুহূর্তে

আরও পড়ুন