বোলপুরের আকাশে সেদিন হালকা রোদ ছিল, বাতাসের মধ্যে একটা চাপা উত্তেজনা। কারণ, আজ ছিল জীবনের দ্বিতীয় বড় পরীক্ষা। একলব্য মডেল স্কুলের ছাত্রীদের জন্য দিনটা ছিল বেশ গুরুত্বপূর্ণ। পরীক্ষার হলে ঢুকতেই শ্বেতা আর রিমি একসঙ্গে বসেছিল। দুজনেই চুপচাপ প্রশ্নপত্র হাতে নিয়ে উত্তর লিখতে শুরু করল।
কিন্তু, তখন কেউ কল্পনাও করতে পারেনি যে কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই এক ভয়ানক ঘটনা ঘটতে চলেছে।
হঠাৎ করেই একটা বিকট শব্দ! মাথার উপর থেকে ভেঙে পড়ল বিশাল এক সিলিং ফ্যান। পরীক্ষা হল জুড়ে চিৎকার, দৌড়াদৌড়ি শুরু হয়ে গেল। ফ্যানটি সরাসরি গিয়ে পড়ল শ্বেতা আর রিমির মাঝখানে! প্রচণ্ড ব্যথায় আর ভয় পেয়ে দুজনেই চিৎকার করে উঠল। তাদের বই, খাতা, পেন সব ছিটকে পড়ল চারদিকে।
শিক্ষকরা ছুটে এলেন, কয়েকজন ছাত্র-ছাত্রীও দৌড়ে এল। শ্বেতার হাত কেটে গেছে, রিমির মাথায় হালকা আঘাত লেগেছে। চারপাশের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ল সবার মনে। পরীক্ষা এক মুহূর্তে ভুলে গিয়ে সবাই শুধু একটাই চিন্তা করছিল – “ওরা ঠিক আছে তো?”
স্কুল কর্তৃপক্ষ কোনো ঝুঁকি না নিয়ে সঙ্গে সঙ্গে শ্বেতা আর রিমিকে নিয়ে গেল বোলপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। গেটের সামনে অভিভাবকদের উৎকণ্ঠিত ভিড়, বন্ধুরা উদ্বিগ্ন চোখে তাকিয়ে।
হাসপাতালের ডাক্তার পরীক্ষা করে বললেন, “ভয়ের কিছু নেই, চোট সামান্য। তবে বিশ্রাম দরকার।”
শ্বেতা আর রিমি একে অপরের দিকে তাকিয়ে একটু হাসল। হয়তো এখন তারা ভয় কাটিয়ে উঠতে পারবে। কিন্তু পরীক্ষার হলে বসে থাকা আর মাথার উপরের ফ্যান—এটা কি তারা সহজে ভুলতে পারবে?
ঘটনাটি সেদিন স্কুলের গাফিলতির এক বড় উদাহরণ হয়ে রইল, আর শিক্ষার্থীদের মনে রয়ে গেল এক ভয়াবহ অভিজ্ঞতা।
বিঃদ্রঃ – বোলপুরের ঘটনা অবলম্বনে লিখিত।
|| সমাপ্ত ||