সকালবেলার মিষ্টি রোদ মাগুরার আকাশে। বাড়ির উঠোনজুড়ে সাজসজ্জার ব্যস্ততা। লাল বেনারসী পরে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে সঞ্চিতা। আজ তাঁর বিয়ে! শুধু কোনো সাধারণ বিয়ে নয়, দুই বাংলার ভালোবাসার বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার দিন।
অনির্বাণ, ভারতের পূর্ব মেদিনীপুরের ছেলে। ডাক্তারির পাঠ নিতে গিয়ে ঢাকা গিয়েছিল, আর সেখানেই পরিচয় সঞ্চিতার সঙ্গে। ধীরে ধীরে বন্ধুত্ব, তারপর প্রেম। একে অপরকে ভালোবেসে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, যাই হোক, একসঙ্গে পথ চলবে।
২০২৪ সালেই আইনি বিয়ে সেরে ফেলেছিল দু’জন। তবে সামাজিক রীতি মেনে সঞ্চিতার মাগুরার বাড়িতে ধুমধাম করেই হলো আনুষ্ঠানিক বিবাহ। বরযাত্রীদের চোখে বিস্ময় আর আনন্দ—বাংলাদেশের মাটিতেও যেন নিজেরাই ঘরের মানুষ!
সঞ্চিতার মা-বাবা সাদরে গ্রহণ করলেন অনির্বাণকে, তার পরিবারকে। বিয়ের মণ্ডপে উপস্থিত ছিলেন এলাকার মুসলিম প্রতিবেশীরাও। একসঙ্গে বসে খাওয়াদাওয়া, গল্পগুজব, আনন্দের রঙে রঙিন হয়ে উঠল পুরো বাড়ি।
কিন্তু সমস্যা বাধল বউভাতে। ভারত-বাংলাদেশের অস্থিরতার কারণে সঞ্চিতার আত্মীয়রা আসতে পারলেন না। একটু মন খারাপ ছিল বটে, তবে সঞ্চিতার চোখে ছিল স্বপ্ন—ভবিষ্যতে সব ঠিক হয়ে যাবে।
বিয়ের পর প্রথমবার ভারতের মাটিতে পা রাখল সঞ্চিতা। নতুন পরিবেশ, নতুন মানুষ—কিন্তু মনটা কেমন যেন আপন হয়ে গেল! অনির্বাণের বাবা-মাও যেন মেয়ের মতোই আপন করে নিলেন তাকে। সাতদিন পর আবার ফিরতে হবে বাংলাদেশে, অষ্টমঙ্গলার জন্য। কিন্তু এবার সে একা যাবে না, সঙ্গে থাকবে দুই বাংলার ভালোবাসার সেতুবন্ধন।
সঞ্চিতা জানে, সীমান্তের রেখা ভালোবাসার বাধা হতে পারে না। একদিন এই অস্থিরতার কালো মেঘ কেটে যাবে, দুই বাংলার সম্পর্ক আগের মতোই মিষ্টি হয়ে উঠবে। তখন আর কেউ আটকে রাখবে না দুই দেশকে এক করা হৃদয়ের বন্ধনকে!
বিঃ দ্রঃ – দুই দেশের প্রেমিক প্রেমিকার ভালোবাসা থেকে পরিনয়। উত্তর ২৪ পরগণার ঘটনা অবলম্বনে লিখিত।
|| সমাপ্ত ||