Homeউত্তরবঙ্গSiliguri: শেষ রাতের বিরিয়ানি

Siliguri: শেষ রাতের বিরিয়ানি

রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে ছিল তৃষা, রিয়া, এবং তাদের কয়েকজন বন্ধু।

শিলিগুড়ির তিনবাত্তি মোড়ের কোলাহল তখনও কমেনি। সন্ধ্যা নামছে ধীরে ধীরে। দোকানের হলুদ আলোয় মেখে থাকা রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে ছিল তৃষা, রিয়া, এবং তাদের কয়েকজন বন্ধু। গরম ধোঁয়া ওঠা বিরিয়ানি সামনে রাখা, হালকা হাসি-মজা, ঠিক তখনই ফোনে ঢুকল একটা অদ্ভুত মেসেজ—“ওই মেয়েটা আর নেই!”

তৃষার হাত থেকে প্রায় পড়ে যাচ্ছিল ফোনটা। রিয়া দ্রুত তার দিকে তাকাল।

“কী হলো?”

“তুমি… তুমি শুনলে? আমাদের সঙ্গে যে নীলা বেরিয়েছিল, সে… সে নেই!”

চারদিকে মুহূর্তেই নেমে এল নিস্তব্ধতা। মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগেই একসঙ্গে বেরিয়ে এসেছিল তারা। নীলা বলেছিল, “আমি একটু পরে আসছি, তোমরা খাও, আমি একটা ফোন করে আসছি!” তারপর থেকে ওর আর কোনো খবর ছিল না।

অদ্ভুত মৃত্যু

পরদিন সকালে উত্তরকন্যার পাশের জঙ্গল থেকে মিলল নীলার নিথর দেহ। তার শরীরে আঁচড়ের দাগ, গলায় চাপের দাগ, আর নখের ক্ষতচিহ্ন দেখে পুলিশ প্রথমেই ধর্ষণ ও হত্যার সন্দেহ করল।

নীলার পরিবার কাঁদতে কাঁদতে বলছিল, “ওর কোনো শত্রু ছিল না! ও তো মাত্র চোদ্দ বছর বয়সের মেয়ে! এমন করল কে?”

তদন্তে নেমে পুলিশ প্রথমেই নজর দিল সেই বন্ধুর দিকে, যে প্রথম ফোন করে বলেছিল, “নীলার দেহ পাওয়া গেছে!”

“তুমি জানলে কীভাবে?”—গম্ভীর মুখে প্রশ্ন করলেন অফিসার রাজীব ঘোষ।

“আমি… আমি তো… আমি ফোন পেয়েছিলাম!”—কাঁপা গলায় বলল যুবক।

রহস্য ঘনিয়ে আসে

কিন্তু কল লিস্টে কোথাও এমন কোনো ফোনকলের অস্তিত্ব মিলল না! তাহলে সে কীভাবে জানল নীলা ওই জঙ্গলে আছে?

জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে আটক করা হলো। কিন্তু সে মুখ খুলছিল না।

ঠিক তখনই এক নতুন তথ্য সামনে এল—নীলার ফোন এখনও পাওয়া যায়নি! কেউ তার মোবাইল বন্ধ করে দিয়েছে।

পুলিশ এবার খোঁজ শুরু করল জঙ্গলের আশেপাশের সিসিটিভি ফুটেজে। রাত এগারোটার দিকে দেখা গেল, এক অন্ধকার গলিতে তিনজন ছায়ামূর্তি কিছু একটা টানতে টানতে নিয়ে যাচ্ছে।

ভয়ঙ্কর সত্য

জিজ্ঞাসাবাদের চাপে অবশেষে সত্যিটা সামনে এল। সেই বন্ধুটির সাথে আরও দু’জন ছিল। তারা মজা করার নাম করে নীলাকে একটা নির্জন জায়গায় নিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু নীলা প্রতিবাদ করেছিল। ওরা ভয় পেয়ে যায়, ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় ওকে। তারপর যখন দেখে ও সাড়া দিচ্ছে না, তখন আতঙ্কে দেহটা জঙ্গলে ফেলে পালিয়ে যায়।

যখন পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করল, তখনো নীলার মা হাসপাতালের বাইরে বসে ছিলেন। তার একটাই প্রশ্ন—“আমার মেয়ে কী দোষ করেছিল?”

এ প্রশ্নের উত্তর কেউ দিতে পারল না। শুধু রাতের বাতাসে ভেসে বেড়াল নীলার নিথর ছায়া…

বিঃদ্রঃ – শিলিগুড়ির ঘটনাকে গল্পের আকারে লেখা হয়েছে। গল্পের চরিত্ররা কাল্পনিক হতে পারে।

|| সমাপ্ত ||

এই মুহূর্তে

আরও পড়ুন