HomeAllDeep Fridge e mrityufand: ডিপ ফ্রিজে মৃত্যুফাঁদ

Deep Fridge e mrityufand: ডিপ ফ্রিজে মৃত্যুফাঁদ

কাহিনী টি একটি বাস্তবের দুর্ঘটনার

লিলুয়ার কোনা তেঁতুলতলার সেই ছোট্ট আইসক্রিম কারখানাটি শহরের কোলাহল থেকে দূরে, যেন এক নির্জন স্থানে দাঁড়িয়ে ছিল। দিনের আলো ফুরিয়ে আসার পর কারখানার ব্যস্ততা কমলেও, রবিবার রাতে কারখানার মালিক জিতেশ দাসের তদারকি চলছিল নিয়মমতো। কাজের ফাঁকে কর্মীদের মাঝে জিতেশ ছিলেন এক মজার মানুষ, যিনি নিজের শ্রম আর ভালোবাসা ঢেলে এই আইসক্রিম ব্যবসাটিকে দাঁড় করিয়েছিলেন।

জিতেশের জীবন ছিল সরল, তবে যেন সারা পরিবারকে ঘিরেই আবর্তিত। স্ত্রী আর মাত্র এক বছরের শিশুকন্যা ছিল তার সমস্ত সুখের কারণ। ছোট্ট দাশনগরের বাড়িতে কাজ শেষে ফিরে এসে কন্যার হাসি দেখেই সে দিনের সমস্ত ক্লান্তি ভুলে যেত। পরিবারে একমাত্র উপার্জনকারী হওয়ার কারণে তার ওপর দায়িত্ব ছিল বিশাল। আর এই আইসক্রিম কারখানাটিই ছিল তার সব স্বপ্নের কেন্দ্রবিন্দু।

কিন্তু সেই রাতের সবকিছু যেন অন্যরকম ছিল। রবিবার রাত ১০টা, কারখানার ভিতরে কয়েকজন কর্মচারী কাজের জায়গা গুছিয়ে নিচ্ছিল, আর জিতেশ দাস শেষবারের মতো কারখানার ডিপ ফ্রিজগুলো দেখে নিচ্ছিলেন। হঠাৎই তার চোখে পড়ল একটি ডিপ ফ্রিজের আলো বন্ধ হয়ে আছে। ব্যাপারটি প্রথমে সাধারণ মনে হলেও, জিতেশ কোনোরকম ঝুঁকি না নিয়ে ডিপ ফ্রিজটি পরীক্ষা করতে গেলেন।

হাত বাড়িয়ে ফ্রিজের দরজা খুলতেই ঝটকা মেরে বিদ্যুতের এক স্রোত তার শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। মুহূর্তের মধ্যে যেন চারপাশে অন্ধকার নেমে আসে। তার মুখে বের হয় এক করুণ চিৎকার। সহকর্মীরা মুহূর্তেই বুঝে ওঠে, বড় কিছু ঘটে গেছে। তারা ছুটে আসে, কিন্তু জিতেশ তখন নিথর হয়ে মাটিতে পড়ে রয়েছে।

ঘটনাটি যেন কারখানার প্রতিটি দেয়ালে প্রতিধ্বনিত হচ্ছিল। সহকর্মীরা আতঙ্কিত হয়ে পুলিশকে খবর দেয়, আর কিছুক্ষণের মধ্যেই লিলুয়া থানার পুলিশ এসে ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, ডিপ ফ্রিজটিতে শর্ট সার্কিট হয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট অবস্থায় ছিল, আর সেটাই ছিল তার মৃত্যু কারণ।

জিতেশের দেহ ময়না তদন্তের জন্য নিয়ে যাওয়া হলেও, কারখানার ভেতর সেই করুণ নীরবতা আর সহকর্মীদের মর্মাহত মুখের ভিড়ে তার গল্প রয়ে গেল। তার পরিশ্রম আর আত্মত্যাগে গড়ে তোলা স্বপ্নভরা কারখানাটি আর তার নির্মল হাসি, পরিবার ও সহকর্মীদের জীবনে শূন্যতা হয়ে রইল।

পরদিন সকালে তার স্ত্রী যখন সংবাদটি পেলেন, পৃথিবী যেন তার পায়ের নিচ থেকে সরে গেল। ছোট্ট কন্যা তখনও বাবার জন্য অপেক্ষা করছে, যে প্রতিদিন রাতে বাড়ি ফিরত এবং হাসিমুখে তার মুখে ছোট্ট চুমু দিত। এই মর্মান্তিক ঘটনায় জিতেশের সেই কন্যা আজ বাবার মুখটি শেষবারের মতোও দেখতে পেল না।

জিতেশ দাসের বিদায়ে কারখানার সবার মনে এক গভীর শূন্যতা ও বিরহ রয়ে গেল। সেই ছোট্ট আইসক্রিম কারখানাটি আজও দাঁড়িয়ে আছে, তবে জিতেশের অনুপস্থিতিতে যেন কারখানাটি প্রাণহীন।

|| সমাপ্ত ||

Disclaimer: কাহিনী টি একটি বাস্তবের দুর্ঘটনার। যেহেতু দুঃখজনক গল্পের আদলে লেখা। তাই সব তথ্য মিলতে নাও পারে।

________

এই মুহূর্তে

আরও পড়ুন