HomeদেশChar Dham: ১০ টাকার মন্দির চার ধাম

Char Dham: ১০ টাকার মন্দির চার ধাম

এরপর বদ্রীনাথ, রামেশ্বরম, দ্বারকা

পকেটে মাত্র ১০ টাকা, আর সামনে ১২ হাজার কিলোমিটারের পথ—এই নিয়েই মহেন্দ্র যাদব রওনা হয়েছেন জীবনের এক মহাযাত্রায়। বয়স পঞ্চাশের কোঠায়, মধ্যপ্রদেশের পান্না জেলার হিনতো গ্রামের এই মানুষটির পায়ে এখন গোটা ভারতের ধুলো। তাঁর একমাত্র লক্ষ্য—১২টি জ্যোতির্লিঙ্গ এবং চারধামের দর্শন। তবে এই যাত্রা শুধু তীর্থ নয়, বরং এক অভিযান। যুবসমাজকে মোবাইলের আসক্তি থেকে দূরে রাখা এবং তাদের সনাতন সংস্কৃতির দিকে ফিরিয়ে আনার বার্তা দিতে তিনি হাঁটছেন এক পা এক পা করে।

শুরু হলো পথচলা

চলতি বছরের ২ জানুয়ারি সূর্যোদয়ের আগে, যখন শহর এখনো ঘুমে, তখনই মহেন্দ্র বেরিয়ে পড়লেন। কোনো টাকা নেই, নেই কোনো গাড়ি, নেই কোনো ব্যাগভর্তি খাবার। শুধু পিঠে একটা ব্যাগ, তাতে ১২ জ্যোতির্লিঙ্গ ও চারধামের ছবি, আর মনে এক দৃঢ় সংকল্প। পথে পথে যে যা দেয়, তাই খেয়ে নিচ্ছেন। যে যেখানে জায়গা দেয়, সেখানেই রাত কাটাচ্ছেন।

এইভাবে ২২ দিন ধরে হাঁটতে হাঁটতে তিনি পৌঁছে গেছেন পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়ায়। পথে কত কিছু ঘটেছে, কত অচেনা মানুষ কাছে এসে বলেছে—
“বাবা, খেয়ে যান।”
“এই নিন, রাতে আমার দোকানের বারান্দায় শুতে পারেন।”
“আপনার এই সংকল্প যেন পূরণ হয়!”

অতিথি ভারতভূমি

পথে পথে চলার এক অনন্য অভিজ্ঞতা হচ্ছে মহেন্দ্রর। খাবার বা আশ্রয়ের কোনো অভাব হয়নি। তিনি বলেন, “আমি পথে পথে অনেক কিছু শিখছি। ভারতে কেউ একলা নয়। এখানে এক টুকরো রুটি ভাগ করে নেওয়ার জন্যও অনেক হাত এগিয়ে আসে। পকেটে ১০ টাকা নিয়ে বের হলেও কেউ না কেউ আমার দেখভাল করছে।”

যাত্রার পরবর্তী গন্তব্য

এখন তিনি ওড়িশার দিকে রওনা হয়েছেন। তাঁর গন্তব্য পুরী ধাম। কিন্তু পথ এখানেই শেষ নয়! এরপর বদ্রীনাথ, রামেশ্বরম, দ্বারকা, আর বাকি ১২টি জ্যোতির্লিঙ্গ তাঁকে হাতছানি দিয়ে ডাকছে। সামনে এখনও ১১ হাজার কিলোমিটারের পথ। ক্লান্তি? নিশ্চয়ই আছে, মুখে কাচাপাকা দাড়িতে তার ছাপ স্পষ্ট। কিন্তু চোখের আগুন এখনো নেভেনি।

হাঁটতে হাঁটতে বলরামপুরে এক মুহূর্ত দাঁড়ালেন তিনি। এক ঢোঁক জল খেলেন। ব্যাগ থেকে বের করলেন একটি ছোট্ট পোস্টার—

“মোবাইল ছাড়ুন, জীবনকে আলিঙ্গন করুন।”

তারপর আবার হাঁটতে শুরু করলেন। সামনে মহেন্দ্রর এক দীর্ঘ যাত্রা, কিন্তু তিনি জানেন—পথই তার সবচেয়ে বড় সঙ্গী।

বিঃ দ্রঃ – মধ্যপ্রদেশের পান্না জেলার হিনতো গ্রামের মহেন্দ্র যাদবের পথ চলার কাহিনী অবলম্বনে লিখিত।

|| সমাপ্ত ||

এই মুহূর্তে

আরও পড়ুন