HomeRomantic StoryMeghla Diner Alo: মেঘলা দিনের আলো (পর্ব - ১)

Meghla Diner Alo: মেঘলা দিনের আলো (পর্ব – ১)

সুবিমল কিন্তু সহজে হার মানার ছেলে নয়

মেঘলা, গ্রামের দরিদ্র পরিবারের মেয়ে। স্বপ্ন ছিল, একদিন নিজের পায়ে দাঁড়াবে। কিন্তু বাস্তবতা তাকে বারবার ফিরিয়ে নিয়ে আসে। বাবা মা দিনমজুর, সংসারের অভাবের মধ্যে বড় হওয়া মেয়েটা নিজের জীবনটাকে সাদামাটা ভাবেই মেনে নিয়েছিল। গ্রামের এক চায়ের দোকানে কাজ করত সে।

অন্যদিকে সুবিমল, শহরের বড়লোক ব্যবসায়ীর একমাত্র ছেলে। পেশায় সরকারি কর্মচারী। বিলাসিতা, আধুনিকতা আর নিজের ইচ্ছেমতো চলাই তার জীবনের মূলমন্ত্র।

দুজনের পরিচয় হয় এক অদ্ভুত ঘটনার মধ্য দিয়ে।

রাতের গ্রামের মেঠো রাস্তা। বৃষ্টি শুরু হয়েছে, রাস্তার ওপর জ্বলজ্বলে গাড়ির আলো আর জলের ফোঁটার প্রতিফলন মিলেমিশে এক ধোঁয়াটে পরিবেশ তৈরি করেছে। সুবিমল, রুরাল ডেভলপমেন্ট অফিসার। জরুরি মিটিং শেষে ফেরার পথে একবার গ্রামটি ঘুরে দেখতে চেয়েছিল। নিজেই গাড়ি চালাচ্ছিল সে। তাড়া ছিল, কিন্তু বৃষ্টির কারণে রাস্তা পিছল। হঠাৎ, এক অন্ধকার মোড়ে একটি বাইক সামনে এসে পড়ে। ব্রেক চাপলেও গতি নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়নি। ধাক্কা লেগে গাড়ি রাস্তার পাশের ডোবার দিকে ছিটকে পড়ে।

চারপাশে অন্ধকার, গাড়ির ভেতর আটকে পড়া সুবিমলের মনে হচ্ছিল এটাই তার জীবনের শেষ মুহূর্ত। গ্লাস ভেঙে কপাল থেকে রক্ত ঝরছে। ধীরে ধীরে তার চেতনা হারিয়ে যাচ্ছে।

ঠিক তখনই, বৃষ্টির মধ্য দিয়ে এক তরুণী ছুটে আসে। মেয়েটার নাম মেঘলা। পাশের চায়ের দোকানে কাজ করে। দূর থেকে দুর্ঘটনার আওয়াজ শুনে সে ঘটনাস্থলে আসে। ভয় পেয়ে গেলেও দেরি করেনি।

“কেউ আছেন?” মেঘলা জোরে চিৎকার করে। গাড়ির ভাঙা জানালার ভেতর দিয়ে সুবিমলকে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে। দ্রুত চারপাশের লোকজনের সাহায্য চেয়ে ব্যর্থ হয়, কারণ কেউই ঝুঁকি নিতে চায়নি।

মেঘলা নিজেই হাল ধরল। দরজা খুলে সুবিমলকে বের করার চেষ্টা করতে গিয়ে তার হাত কেটে যায়। তবুও সে দমেনি। অবশেষে, রক্তাক্ত অবস্থায় সুবিমলকে টেনে এনে রাস্তার পাশে নিয়ে আসে।

সুবিমলকে হাসপাতালে নেওয়া হলো। চিকিৎসকরা বললেন, “কিছুক্ষণ দেরি হলেই প্রাণ হারাতেন।” জ্ঞান ফিরে আসার পর সুবিমল জানতে পারে, তার জীবন বাঁচিয়েছে এক সাধারণ চায়ের দোকানের মেয়ে।

কয়েকদিন পর, সুবিমল মেঘলাকে খুঁজে বের করে। প্রথম দেখাতেই মেয়েটির চোখের গভীরতা আর নির্ভীকতা তার হৃদয় ছুঁয়ে যায়। মেঘলার সরলতা আর সাহস সুবিমলকে অন্য এক পৃথিবীর সন্ধান দেয়।

কিন্তু মেঘলা সুবিমলের সাহায্য নিতে অস্বীকার করে। সে বলে, “আমি শুধু একজন মানুষের জীবন বাঁচিয়েছি। এর জন্য কিছু চাই না।”

সুবিমল কিন্তু সহজে হার মানার ছেলে নয়। সে বুঝতে পারে, তার জীবনের দুর্ঘটনা কেবলই এক নতুন অধ্যায়ের শুরু। মেঘলা কি তার জীবনে থেকে যাবে? নাকি এই গল্পের নায়িকা কোনো অলক্ষ্যে মিলিয়ে যাবে?

গল্প এখানেই শেষ নয়। দুজনের জীবন ধীরে ধীরে এমনভাবে জড়িয়ে যায়, যেখানে সাহস আর কৃতজ্ঞতা একসাথে মিলে এক নতুন ভালবাসার জন্ম দেয়।

গল্পটি এখনও চলবে…

________

এই মুহূর্তে

আরও পড়ুন