বছর দুয়েক আগে রুদ্রনীল নামে এক তরুণ সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার চাকরি পেয়েছিল সুইজারল্যান্ডের একটি কোম্পানিতে। নতুন দেশে গিয়ে সে অনেক কিছুই আবিষ্কার করছিল, কিন্তু একদিন তার এক সুইস সহকর্মী জিজ্ঞেস করল,
“তোমাদের ফোন নম্বর সব +৯১ দিয়ে শুরু হয় কেন?”
রুদ্রনীল কিছুটা হেসে বলল, “এটা আমাদের দেশের আন্তর্জাতিক কোড, যেমন তোমাদের +৪১।”
কিন্তু সহকর্মী আবার জিজ্ঞেস করল, “কিন্তু কেন +৯১? অন্য সংখ্যা তো হতে পারত!”
এবার রুদ্রনীল নিজেও একটু ভাবল। সত্যি তো, কেন ভারতের কোড +৯১? কৌতূহলী হয়ে সে নিজেই খোঁজ নিতে শুরু করল।
ফোন কোডের ইতিহাস
১৯৬০-এর দশকে আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ সংস্থা (ITU) প্রতিটি দেশের জন্য একটি নির্দিষ্ট কোড বরাদ্দ করতে শুরু করে। তখন ভারত নতুন স্বাধীন দেশ, বিশ্বের মানচিত্রে তার জায়গা আরও সুসংহত করার সময়।
সেই সময় বিশ্বকে কয়েকটি অঞ্চলে ভাগ করা হয়েছিল:
- ১ : উত্তর আমেরিকা
- ২-৩ : ইউরোপ
- ৪-৫ : আফ্রিকা
- ৬-৭ : রাশিয়া ও তার আশপাশের দেশ
- ৮-৯ : এশিয়া
ভারত যেহেতু এশিয়াতে, তাই স্বাভাবিকভাবেই তার কোড ৮ বা ৯ দিয়ে শুরু হবে। কিন্তু তখন ইতিমধ্যেই বেশ কিছু দেশ ৮ দিয়ে শুরু হয়ে গেছে, তাই ভারতের জন্য ৯১ নির্ধারণ করা হয়।
কিন্তু কেন ৯১?
অনেকেই বলেন, এটি ছিল একধরনের কৌশল। ভারত তখন উন্নয়নশীল দেশ, কিন্তু ভবিষ্যতে এটি বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ অর্থনীতি হবে—এই আশা নিয়েই ৯১ নম্বরটি বরাদ্দ করা হয়, কারণ এটি একটি সহজ, মনে রাখার মতো নম্বর।
অন্য একটি গল্প বলে, ভারত ৯০ নম্বর চেয়েছিল, কিন্তু পাকিস্তান ৯২ কোড পাওয়ায় ভারতের কোডকে ৯১ করা হয় যাতে সংখ্যাগুলি ধারাবাহিক থাকে।
ফোন কোডের মাহাত্ম্য
রুদ্রনীল এই ইতিহাস জানতে পেরে অবাক হলো! সে ভাবল, “শুধু একটা নম্বর নয়, এটি আসলে আমাদের পরিচয়েরই অংশ!”
পরদিন অফিসে গিয়ে সে তার সুইস সহকর্মীকে পুরো গল্পটি বলল। শুনে সে অবাক হয়ে বলল,
“তাহলে তোমাদের +৯১ শুধু একটা নম্বর নয়, বরং ভারতের উত্থানের সাক্ষী!”
রুদ্রনীল হেসে বলল, “ঠিক তাই! +৯১ মানে ভারত, তার ঐতিহ্য, তার ভবিষ্যৎ!”
বিঃ দ্রঃ – মবাইল নম্বরের জ্ঞানের আদলে লেখা এই গল্পটি।
|| সমাপ্ত ||
________