HomeAllPremer Chorabali - 2: প্রেমের চোরাবালি দ্বিতীয় পর্ব

Premer Chorabali – 2: প্রেমের চোরাবালি দ্বিতীয় পর্ব

অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল বিদ্যুতের দিকে

প্রথম পর্বে যা ঘটেছেদেখা করার দিন আসতে পারল না তাপস। এদিকে দেখা হয়ে গেল কলেজের বন্ধু বিদ্যুতের সাথে। দুজনে বসে কফি খেলো। সৃষ্টির প্রিয় কোল্ড কফি! কিন্তু বিদ্যুৎ জানল কি করে? ভাবল সৃষ্টি। তবে বিশেষ আমল দিল না। তারপর…

বিদ্যুতের মনের কোণে নিবিড় এক ভালোবাসার জন্ম হয়েছিলো যখন সে প্রথম সৃষ্টিকে দেখেছিলো। সে ছিলো তাদের কলেজের নতুন ছাত্রী – বড় বড় চোখ, মিষ্টি হাসি আর শান্ত স্বভাবের মেয়েটি যেন বিদ্যুতের মনের প্রতিটি কোণ আলো করে দিয়েছিলো। সৃষ্টি খুব সাধারণভাবে থাকলেও, তার আভিজাত্যের মধ্যে এমন একটা আকর্ষণ ছিল যা বিদ্যুতকে মুগ্ধ করেছিল।

বিদ্যুত সৃষ্টিকে প্রতিদিন কলেজে চুপি চুপি ফলো করতো। সে কখনো সৃষ্টির নজরে আসতে চাইত না, বরং দূর থেকে তাকে দেখেই যেন তার দিনটা ভালো হয়ে যেত। কিছুদিন এভাবে কাটলো, আর বিদ্যুত বুঝতে পারলো যে সৃষ্টিকে ভালোবাসা তার জন্য ধীরে ধীরে এক নেশায় পরিণত হয়েছে।

প্রথমদিকে সৃষ্টি কিছুই বুঝতে পারতো না। কিন্তু কলেজের বন্ধুরা মজার ছলে একদিন বললো, “সৃষ্টি, মনে হয় বিদ্যুত তোকে পছন্দ করে, ওকে প্রায়ই তোর আশেপাশে দেখি।” সৃষ্টি প্রথমে হেসে উড়িয়ে দিলেও পরে ভেবে দেখলো, সত্যিই বিদ্যুতের উপস্থিতি সে প্রায়ই অনুভব করে। আর ঠিক এই অনুভব থেকেই তার মনের মধ্যে কৌতূহল জন্মায়।

এরপর সৃষ্টি নিজেই লক্ষ্য করতে লাগলো, বিদ্যুত তাকে কলেজের ক্যান্টিনে বা লাইব্রেরিতে সবসময় একটু দূর থেকেই দেখছে। সে দেখতে পেলো, তার পছন্দের চায়ের দোকানে বিদ্যুতও আকস্মিকভাবে প্রায়ই উপস্থিত থাকে। যেন সব জায়গায় সবার থেকে আড়ালে থেকেই তাকে লক্ষ্য করছে। একদিন, সৃষ্টি লক্ষ্য করল, তার প্রিয় লেখকের বই সে লাইব্রেরি থেকে নেয়ার চেষ্টা করছিলো কিন্তু বইটা আগেই কেউ নিয়ে গিয়েছে। পরে, সৃষ্টি জানতে পারে সেই বই বিদ্যুতই নিয়েছে। মনের মধ্যে সন্দেহটা আরো শক্তিশালী হয়ে উঠলো।

এদিকে বিদ্যুত সৃষ্টির পছন্দ অপছন্দ সব গোপনে গোপনে জেনে নেয়। জানে তার প্রিয় খাবার, পছন্দের গান, এমনকি ছোট ছোট অভ্যাসগুলোও। সে মনে মনে এক অদৃশ্য বাঁধনে জড়িয়ে যাচ্ছে, যেখানে সৃষ্টির প্রতি মমতার সাথে তাকে বোঝানোর তাগিদ কাজ করছে। তবে সরাসরি কিছু বলার সাহস তার নেই, তাই বিদ্যুত নিজের ভালোবাসাটুকু শুধু সৃষ্টির প্রতি একনিষ্ঠভাবে মনোযোগ দিয়েই প্রকাশ করে।

সৃষ্টি একসময় ঠিকই বুঝতে পারলো, আর তার মনেও বিদ্যুতের জন্য একটা নরম ভাবের সৃষ্টি হলো। কিন্তু সৃষ্টি সেভাবে পাত্তা দিল না। সে ক্রমশ নিজের দূরত্ব বাড়িয়ে যেতে থাকল। তবে বন্ধুত্বের জন্য যতটুকু দরকার সেটুকুই কথা বলত সে।

এদিন পার্কে দেখা হয়ে যাবার পর সৃষ্টি যেন অনেকটাই নিজেকে হারিয়ে ফেলল। মনে মনে ভাবল তাপসদা হয়ত ভালো মানুষ। কিন্তু বিদ্যুৎ দিনের পর দিন ভালবাসাস পাবার জন্য যে পরীক্ষা দিয়ে যাচ্ছে সেটা তো অনেক বেশি। সৃষ্টি বুঝতে পারলো, এমন নির্ভীক ভালোবাসা আর অপার মমতা সব সময় পাওয়া যায় না।

হটাৎ করে তাপসদার ফোন ঢুকতে দেখল সৃষ্টি। ফোনে তাপসদার কথা শুনে যেন থ হয়ে গেল সৃষ্টি। অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল বিদ্যুতের দিকে।

চলবে… (শেষ পর্ব -৩) পর্যন্ত।

________

এই মুহূর্তে

আরও পড়ুন