গল্পের দ্বিতীয় পর্বে, হটাৎ করে তাপসদার ফোন ঢুকতে দেখল সৃষ্টি। ফোনে তাপসদার কথা শুনে যেন থ হয়ে গেল সৃষ্টি। অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল বিদ্যুতের দিকে।
তারপর...
তাপসের ফোনের কথা গুলি যেন এক অন্য জগতের মায়ায় ভরিয়ে দিল সৃষ্টিকে। তবে এই মায়া তাপসের জন্য নয়। এ মায়া বিদ্যুতের জন্য।
যেদিন বিদ্যুৎ জানতে পেরেছিল যে সৃষ্টি তাপসের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছে, সেদিন তার মন একরাশ কান্নায় ভরে গিয়েছিলো। কারণ যে সৃষ্টিকে সে এত ভালোবাসে আজকের পর থেকে তাকে আর কোনদিন কাছে পাওয়া হবে না। সৃষ্টি তাপসকে ভালবেসে তাপসের হয়ে যাবে।
সারারাত মন খারাপ আর চোখের কোনে বেয়ে এলো একরাশ অশ্রুধারা। কিন্তু “আমি তো একবার শেষ চেষ্টা করতে পারি” ভাবল বিদ্যুৎ।
পরদিন সকালেই তাপসের ঠিকানা জোগাড় করে হাজির তাপসদের বাড়িতে। বিষণ্ণ মুখে খুলে বলল তার ভালবাসার কথা, তার ভালবাসার মানুষের কথা। তাপস-ও অনেক ভালো মনের মানুষ। সব বুঝে তাপস বলল – “আজ থেকে আমি তোমাদের ভালবাসাকে সফল করবো। না পাওয়া গুলোকে বাস্তবে রূপ দেবো। কারণ ভালবাসা এক অমূল্য রত্নের মত, চাইলেই পাওয়া যায় না”।
মনে মনে একটু কষ্ট হল বটে – কিন্তু তা বিদ্যুতের কস্টের চেয়ে শতগুণ কম।
আর তাই তাপস সেদিন আর পার্কে এলো না। বরং বিদ্যুৎ কে বার বার ফোন করে বলেছে সঠিক সময়ে পৌঁছে যেতে।
এত কিছু শুনে, সৃষ্টিও বিদ্যুতের প্রতি মুগ্ধ হয়ে গেলো। কোল্ড কফির শেষ চুমুকটা দিয়ে সেদিনের মত দুজনে বাড়ি ফিরল। সৃষ্টির সাথে একান্তে সময় কাটিয়ে বিদ্যুতের মনেও যেন বাঁধ ভাঙা খুশির জোয়ার এলো।
তার প্রতিটি ছোটখাটো খেয়াল আর নীরব উপস্থিতি সৃষ্টির মনে এক গভীর অনুভূতির সৃষ্টি করলো।
একদিন সৃষ্টি নিজেই সুযোগ তৈরি করলো। কলেজের ক্যান্টিনে দাঁড়িয়ে সে একটু সযত্নে বিদ্যুতের দিকে তাকিয়ে হাসলো। বিদ্যুত একটু থতমত খেয়ে গেলেও সামলে নিয়ে পাশে এসে দাঁড়ালো। একটু মৃদু হাসি নিয়ে সৃষ্টি বলল, “জানিস, তোর পছন্দের সব কিছুই আমার জানা হয়ে গেছে। কারণ তুই যে নীরবে আমাকে বোঝার চেষ্টা করেছিস, সেটা আমি বুঝে গেছি। আর আজকাল আমারও তোর সেইসব কথায় মুগ্ধ হতে ইচ্ছে করে।”
বিদ্যুত যেন স্বপ্নের রাজ্যে ভাসতে লাগলো। সৃষ্টির কথাগুলো শোনার পর ওর মনের সব দ্বিধা যেন এক লহমায় মিলিয়ে গেলো। সে ধীরে ধীরে বলল, “তাহলে তোকে না জানিয়েও তোর মনের কাছে পৌঁছে গেছি!”
সৃষ্টি হাসিমুখে তার দিকে তাকিয়ে বিদ্যুতের হাতটা ধরল। দুইজনের চুপিচুপি ভালোবাসা, তখন যেন পূর্ণতার ডানা মেলে ভালবাসার আকাশে হারিয়ে যেতে চাইলো।
||সমাপ্ত||
________