তারকেশ্বর TV: শান্তা শর্মা এবং ইফফাত পারভীন সাধারণত পরিবারের সদস্যদের না জানিয়ে বেড়াতে যেতেন । তাদের পরিবার ছোটবেলা থেকেই দুই বন্ধুর মধ্যে ঘনিষ্ঠ বন্ধনকে কখনই মেনে নেয়নি। হুগলির কোন্নগরে আট বছরের ছেলেকে খুনের দায়ে অভিযুক্ত শান্তার এক আত্মীয় দাবি করেছেন, তিনি তাঁর বন্ধু পারভীনের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছিলেন। এদিকে শান্তার ফোন থেকে তথ্য বের করার প্রক্রিয়া চলছে কর্তৃপক্ষের। পাশাপাশি দুই বন্ধুর কিছু ব্যক্তিগত ছবিও হাতে পেয়েছেন তদন্তকারীরা।
গত ১২ ফেব্রুয়ারি কোন্নগরের আদর্শ নগরে নিজের বাড়ি থেকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার হয় শ্রেয়াংশু শর্মা নামে এক ছাত্রের দেহ। মর্মান্তিক ঘটনার চারদিন পর পুলিশ শিশুটির মা এবং তার এক বন্ধুকে গ্রেপ্তার করে। তদন্তে জানা গিয়েছে, শ্রেয়াংশুর বাবা-মায়ের মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছিল। মিলেছে শান্তার বান্ধবীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়ানোর ইঙ্গিত। গোয়েন্দাদের সন্দেহ, মায়ের সমকামী সম্পর্কের ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল শিশুটি, যার জেরে পরিকল্পিত খুনের ঘটনা। তদন্তকারীরা নিশ্চিত যে শিশুটিকে হত্যার বিষয়টি সুপরিকল্পিতভাবে করা হয়েছিল। পারভীন সেই পদ্ধতিতেই খুন করেন।
এদিকে, তার বান্ধবী পারভীন বেশ কিছুদিন অগোচর এ ছিলেন। এবার শান্তার ফোনে সেই ছবি ধরা পড়ল। যদিও তার সন্তানকে হত্যার দায়ে অভিযুক্ত মা অর্থাৎ শান্তার ছবি জনসমক্ষে ছড়িয়ে পড়ে অনেক আগেই।
পারভীন ও শান্তার সম্পর্ক শুরু হয় অনেক আগের থেকেই। সময় যত গড়িয়েছে, তাদের বন্ধন ততই দৃঢ় হয়েছে। শান্তার পরিবারের কথায়, কখনো ছেলেকে নিয়ে, কখনো তাকে ছাড়াই নানা ভ্রমণে বের হন শান্তা ও তার সঙ্গী। শান্তা ও পারভীন একসঙ্গে দুটি বর্ধিত ভ্রমণে গিয়েছিলেন। প্রথমটি তাদের জন্মভূমি বিহারে এবং দ্বিতীয়টি দিল্লিতে। তাজমহলে ছেলে যাওয়ার জন্য বায়না করলেও তাকে সঙ্গে নেননি শান্তা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শান্তার এক আত্মীয় বলেন, ‘কয়েক বছর আগে তারা একটি মন্দিরে গিয়ে মালা বিনিময় করে’। এছাড়া শান্তার মোবাইলে চুড়ি পরা দুই ব্যক্তির ছবি পেয়েছে পুলিশ।
শান্তার স্বামী পঙ্কজ শর্মা জানিয়েছেন, তাঁদের বিয়ে খুব একটা ভালো হয়নি। শান্তার বন্ধুত্বকে তিনি স্বাভাবিকভাবে দেখলেও শান্তার বাপের বাড়ির লোকেরা কোনও দিনই ওদের সম্পর্ক ভাল চোখে দেখেনি। ছেলেকে রেখে খিদিরপুরে বন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে যেতেন, রাতও কাটাতেন শান্তা। পঙ্কজ স্বীকার করেছেন যে তাদের সম্পর্কের টানাপোড়েনের কারণে তিনি এই বিষয়গুলি নজর দিতেন না। পুলিশ জানতে পেরেছে, টাক মাথার কারণে স্বামীকে ভালোবাসতে পারতেন না শান্তা।
পুলিশ জানিয়েছে হেফাজতের মধ্যেই একে অপরের সঙ্গে কথা বলার জন্য উতলা হয়ে পড়ছেন শিশু খুনের অভিযোগে ধৃত দুই মহিলা। শান্তার আচরণে সন্তানের মৃত্যুতে শোকের কোনো ছাপ পাওয়া যায়নি।
________