তারকেশ্বর TV: ২০ মার্চ বুধবার আন্তর্জাতিক চড়ুই পাখি দিবসে চড়ুই পাখির দুর্দশার বিষয়টি আলোচিত হয়। ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অফ নেচারের রিপোর্ট অনুযায়ী, চড়ুই পাখির সংখ্যা কমেনি। কিন্তু কলকাতা শহরে তাদের বাসস্থান কমছে। পক্ষীবিজ্ঞান বিষয়ক গবেষকরা দেখেছেন, গত কয়েক বছরে দেশটিতে চড়ুই পাখি তাদের বাসস্থানের ৯৪ শতাংশ হারিয়েছে।
সংবাদ মাধ্যম ‘এই সময়’ এর রপোর্ট অনুযায়ী, তারা যে হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে তা সহজে কেউ চিনতে পারে না। প্রাকৃতিক আবাসস্থলে প্রাণী বা উদ্ভিদের নিরাপত্তা মূল্যায়নে ‘ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচারের (আইইউসিএন)’ স্ট্যাটাস রিপোর্টের বিশ্বাসযোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও চড়ুইকে ‘ন্যূনতম উদ্বেগজনক’ বা সম্পূর্ণ নিরাপদ হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়েছে। যদিও তাদের সংখ্যা কমেনি। তবে কলকাতা এবং সংলগ্ন অঞ্চলে পরিচিত পাখিদের আবাসস্থল সংকুচিত হচ্ছে। বুধবার (২০ মার্চ) আন্তর্জাতিক চড়ুই দিবসে চড়ুই পাখির ভয়াবহ অবস্থা তুলে ধরা হয়।
পক্ষীবিদদের দ্বারা পরিচালিত সাম্প্রতিক গবেষণা অনুসারে, ভারতের শহুরে অঞ্চলে বসবাসকারী চড়ুইদের আবাসস্থল উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। গত কয়েক বছরে ৯৪ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। পরিবেশ ও প্রকৃতি নিয়ে গবেষণায় নিবেদিত স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন প্রকৃতি সংসদের পক্ষীবিদ অপূর্ব চক্রবর্তী গত কয়েক দশকে শহুরে দৃশ্যপটের ব্যাপক পরিবর্তনের কথা তুলে ধরেন। শহরগুলিতে বাড়ির স্থাপত্য নকশায় উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হয়েছে। যার ফলে চড়ুই পাখির জন্য বাসা বাঁধার জায়গা নেই। ফলস্বরূপ, তাদের আবাসস্থলগুলি মারাত্মকভাবে প্রভাবিত হয়েছে।
একাধিক পাখি বিশেষজ্ঞের দাবি, চড়ুই পাখিদের খাবার খুঁজে পেতে সমস্যা হচ্ছে। চড়ুই প্রাথমিকভাবে ঘাসের বীজ খায়। তবে শহরে বর্তমানে ঘাসের জমির ও অভাব। কলকাতার ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানোই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘পুরোনো কলকাতার গল্প’ (ওল্ড ক্যালকাটা স্টোরি) র লক্ষ্য। এই সংগঠনের সদস্য জয়ন্ত সেনের পাখি দেখার প্রতি প্রবল শখ রয়েছে।
শহরাঞ্চলে অসংখ্য পুরানো বাড়ি ধ্বংস করা হচ্ছে। নতুন ডিজাইনের বাড়িতে তাদের থাকার মতো জায়গা নেই। জয়ন্ত বলেছেন – “আসলে তাদের সংখ্যা কমেনি। তবে এরা আগের মতো মানুষের কাছাকাছি থাকতে পারছে না। তারপরও তারা কাকের মতো মানুষের সান্নিধ্যে থাকতে পছন্দ করে। তারা মানুষের ফেলে দেওয়া আবর্জনা খায়।“
কিছু পাখি প্রেমী যুক্তি দেখান যে শহর থেকে গ্রামাঞ্চলে চড়ুইয়ের চলে যাওয়ার প্রবণতা বাস্তুতন্ত্রের পক্ষে ক্ষতিকারক। তারা জোর দেয় যে ,আন্তর্জাতিক চড়ুই দিবস, নিছকই একটা দিন নয়। তার মনে করে যে অবৈজ্ঞানিক নগর উন্নয়ন আগামী বছরগুলিতে একটি বড় বিপদ ডেকে আনছে।
________