HomeEntertainment StoryTruck Submerged: হুগলীতে ডুবন্ত লরি

Truck Submerged: হুগলীতে ডুবন্ত লরি

তাল মিলিয়ে না চললে বিপদ অনিবার্য!

হুগলির শান্তিপুর গ্রামের কথা। গ্রামটি ছোট হলেও সবুজে ঘেরা, গাছপালা, নদী, আর মাটির পথ মিলিয়ে এক অদ্ভুত মনোরম পরিবেশ। গ্রামের পাশ দিয়েই বয়ে গেছে ছোট্ট একটি খাল। সেই খালকে কেন্দ্র করেই গ্রামের বেশিরভাগ মানুষের জীবনযাত্রা।

একদিন ভোরবেলা, যখন গ্রামের মানুষজন ধীরে ধীরে কাজে বেরোতে শুরু করেছে, তখন একটি বড় লরি এসে গ্রামের এক কোণে দাঁড়ালো। লরির চালক রমেশ কাকু, বেশ আশ্চর্য হয়ে দেখলেন, গ্রামের একদম মধ্যবর্তী জমিটা কিছুটা কাদামাটির মতো দেখাচ্ছে। সেই জমিতে গ্রামের মানুষ গাছ লাগাচ্ছে। কিন্তু রমেশ কাকুর কাজ ছিল ওই জমির পাশে থাকা পুরনো একটি বাড়ির মালপত্র নিয়ে যাওয়া। তাই তিনি লরিটা সেই জমির পাশেই দাঁড় করালেন।

কিন্তু কিছুক্ষণ পরই এক অদ্ভুত ঘটনা ঘটল। রমেশ কাকু লরির দরজা খুলে নিচে নামার আগেই দেখলেন, জমির মাঝখান থেকে জল উঠে আসছে। প্রথমে মনে হয়েছিল হয়তো কেউ পাশের খাল থেকে জল ফেলছে। কিন্তু দ্রুত জল বেড়ে উঠতে লাগল, আর সেই জমির কাদামাটি যেন হঠাৎ ভেঙে পড়ল। লরির সামনের চাকা ধীরে ধীরে কাদার মধ্যে ঢুকে যেতে লাগল।

গ্রামের লোকজন এই দৃশ্য দেখে দৌড়ে এল। কেউ বলল, “এটা তো দিঘি ছিল! অনেক বছর আগে পাতা চাপা দিয়ে জমি বানানো হয়েছে।” কেউ আবার বলল, “মাটির নিচে কি ভূগর্ভস্থ জল রিজার্ভার ফেটে গেছে?”

রমেশ কাকু ভয় পেয়ে গেলেন। তিনি সাহায্যের জন্য চিৎকার করতে লাগলেন। গ্রামের কিছু যুবক দড়ি নিয়ে এল, লরিটাকে টেনে তুলতে চেষ্টা করল। কিন্তু লরির ওজন এত বেশি ছিল যে দড়ি ছিঁড়ে গেল। এর মধ্যেই লরির সামনের অংশ পুরো কাদার মধ্যে ডুবে গেল। রমেশ কাকু তখন চিৎকার করে বললেন, “কেউ বাঁচাও! আমার লরি!”

গ্রামের লোকেরা তখন পঞ্চায়েত প্রধানের কাছে খবর দিল। প্রধানমশাই এসে পরিস্থিতি দেখে জেলা প্রশাসনকে ফোন করলেন। বড় একটা ক্রেন আনার ব্যবস্থা করা হল। কিন্তু ততক্ষণে লরিটির প্রায় অর্ধেক অংশ মাটির নিচে ডুবে গেছে।

জেলা প্রশাসনের লোকেরা এসে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে বলল, “এটা ভূগর্ভস্থ জলরাশির চাপ। মাটির নিচে এতদিন ধরে জল জমে জমে একধরনের হ্রদ তৈরি হয়েছিল। আজ এই লরির ভারের চাপে সেই মাটি ভেঙে গেছে।”

বিকেলের দিকে বড় ক্রেন এনে লরিটা বের করার কাজ শুরু হল। প্রায় পাঁচ ঘণ্টার চেষ্টার পর লরিটা জল-কাদা থেকে টেনে তোলা গেল। রমেশ কাকু প্রাণে বেঁচে গেলেও লরির চেহারা পুরো পাল্টে গেছে।

এই ঘটনার পর গ্রামবাসীরা মাটির নিচের জলরাশি নিয়ে বেশ চিন্তায় পড়ল। তারা সিদ্ধান্ত নিল, আবার পুকুরটি পুনর্নির্মাণ করবে। প্রকৃতিকে অবহেলা করায় এই বিপদ ঘটেছে—এটা সবাই মেনে নিল।

পরে সেই জায়গায় একটি বড় পুকুর খনন করা হয়। গ্রামের মানুষেরা সেই পুকুরের জল ব্যবহার করতে শুরু করল, আর রমেশ কাকু এই অভিজ্ঞতার কথা সবাইকে শোনাতে শোনাতে বলতেন, “প্রকৃতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে না চললে বিপদ অনিবার্য!”

বিঃদ্রঃ – কাল্পনিক গল্প। বাস্তবের সঙ্গে এই গল্পের মিল নেই।

|| সমাপ্ত ||

________

এই মুহূর্তে

আরও পড়ুন