Homeদেশনাগরিকত্ব যাবে না কারও, বলছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক

নাগরিকত্ব যাবে না কারও, বলছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক

তিন দেশ (পাকিস্তান, আফগানিস্তান, বাংলাদেশ) থেকে আসা মুসলিমরা কি আশ্রয় পাবেন না?

তিন দেশ (পাকিস্তান, আফগানিস্তান, বাংলাদেশ) থেকে আসা মুসলিমরা কি আশ্রয় পাবেন না?

পুরনো নাগরিকত্ব আইন অনুযায়ী, এক বছর ভারতে রয়েছেন এবং গত ১৪ বছরে অন্তত ১১ বছর এ দেশে থেকেছেন, এমন যে কেউ (তিনি নিজস্ব ধরনের ধর্মাচরণের জন্য অত্যাচারিত মুসলিম হলেও) নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারেন। সেই নিয়ম সিএএ চালুর পরেও বহাল থাকছে। কিন্তু মুসলিমরা সিএএ মারফত (যেখানে শর্তাধীন সময় ১১ বছর থেকে কমিয়ে ৫ বছর করা হয়েছে) আর্জি জানাতে পারবেন না।

কিন্তু যাঁরা সিএএ চাইছেন (যেমন মতুয়া সম্প্রদায়ের কেউ), তাঁদের তো ভোটার কার্ড, আধার ইত্যাদি আছে। তা সত্ত্বেও কেন সিএএ চান তাঁরা?

ভোটার কার্ড বা আধার থাকা সত্ত্বেও অনেক পরিষেবা পাওয়ার জন্য (যেমন পাসপোর্ট, ভিসা পাওয়া) জন্মস্থানের উল্লেখ করতে হয়। সে ক্ষেত্রে প্রতিবেশী দেশের ঠিকানা দেওয়া হলে, সমস্যায় পড়তে হয়। ভিন্‌ রাজ্যে কাজে যাওয়া থেকে শুরু করে যে কোনও ক্ষেত্রে জন্মের প্রমাণপত্র দাখিল করতে গেলেই একই সমস্যা। অনেকের বিশ্বাস, সিএএ সেই সমস্যা মেটাবে। ভবিষ্যতে দেশ থেকে বিতাড়নের ভয় থাকবে না। কারণ, সিএএ-র আইনি শংসাপত্র পাওয়া সকলে এ দেশের নাগরিক বলে গণ্য হবেন। পাসপোর্ট-সহ কোনও সরকারি পরিষেবা পেতে গিয়ে অনুপ্রবেশকারী হিসেবে চিহ্নিত হওয়ার আশঙ্কা থাকবে না। বিশেষত ভবিষ্যতে কখনও যদি এ দেশে জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনপিআর) তৈরি হয়, তখন তাতে নাম না উঠলে।

সিএএ-তে আবেদনের জন্য কোন কোন নথি লাগবে?

প্রথম ভাগ (১এ)

এই পর্যায়ের জন্য নিম্নলিখিত নথিগুলির মধ্যে যে কোনও একটি জমা দিতেই হবে—

১। বাংলাদেশ, পাকিস্তান বা আফগানিস্তান সরকারের ইস্যু করা পাসপোর্ট।
২। সংশ্লিষ্ট দেশের প্রশাসন কর্তৃক জারি করা জন্মের শংসাপত্র।
৩। বাংলাদেশ, পাকিস্তান বা আফগানিস্তানের স্কুল/কলেজ/বোর্ড/বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাগত যোগ্যতার শংসাপত্র।
৪। সংশ্লিষ্ট দেশের সরকারের দেওয়া পরিচয়পত্র।
৫। বিদেশি আঞ্চলিক নিবন্ধন আধিকারিক বা ভারতে বিদেশি নিবন্ধন আধিকারিকের দ্বারা জারি করা আবাসিক অনুমতি পত্র।
৬। ওই তিন দেশের জারি করা যে কোনও লাইসেন্স।
৭। বাংলাদেশ, পাকিস্তান বা আফগানিস্তানে জমি বা ভাড়াটে সংক্রান্ত রেকর্ড।
৮। আবেদনকারীর পিতা-মাতা বা দাদু-ঠাকুমা বা প্রপিতামহের মধ্যে একজন ওই দেশগুলির নাগরিক বা নাগরিক ছিলেন, এমন নথি।

বস্তুত, আফগানিস্তান বা বাংলাদেশ বা পাকিস্তানের সরকারের জারি করা যে কোনও নথি, যা প্রমাণ করে যে, আবেদনকারী সংশ্লিষ্ট দেশের নাগরিক ছিলেন। সেই নথির বৈধতার সময়কাল অতিক্রান্ত হলেও তা গ্রাহ্য হবে।

দ্বিতীয় ভাগ (১বি)

এই ভাগে নথির মাধ্যমে প্রমাণ দাখিল করতে হবে যে, তিনি কখন ভারতে প্রবেশ করেছেন। তার জন্য এক গুচ্ছ নথির তালিকা দেওয়া থাকলেও, সেগুলির মধ্যে ঠিক কোনগুলি কার জন্য প্রযোজ্য, তা আবেদন পূরণ করার সময়ে জমা দিতে হবে। এই সম্পূর্ণ নথির তালিকার মধ্যে রয়েছে—

১। ভারতে আসার ভিসার ফোটোকপি এবং অভিবাসন দফতরের স্ট্যাপ যুক্ত নথি।
২। রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট বা আবাসিক অনুমতি পত্র যা ভারতে ‘ফরেনার্স রিজিয়োনাল রেজিস্ট্রেশন অফিসার’ বা ‘ফরেনার্স রেজিস্ট্রেশন অফিসার’ (FRO) দ্বারা জারি করা হয়।
৩। ভারতে জনগণনার সময়ে গণনাকারীদের দেওয়া নথি বা স্লিপ।
৪। ভারত সরকারের জারি করা লাইসেন্স বা শংসাপত্র বা পারমিট (ড্রাইভিং লাইসেন্স, আধার কার্ড ইত্যাদির মধ্যে একটি)।
৫। রেশন কার্ড।
৬। সরকারি স্ট্যাম্প-সহ আবেদনকারীকে সরকার বা আদালতের দেওয়া কোনও চিঠি।
৭। ভারত সরকার কর্তৃক জারি করা আবেদনকারীর জন্মের শংসাপত্র।
৮। আবেদনকারীর নামে ভারতে নিবন্ধিত জমির কাগজ বা ভাড়াটে রেকর্ড।
৯। প্যান কার্ড। কবে ইস্যু করা হয়েছে তার তারিখ থাকতে হবে।
১০। কেন্দ্র বা রাজ্য সরকার বা রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার জারি করা কোনও নথি।
১১। গ্রাম বা শহরের স্থানীয় প্রশাসনে অথবা কোনও সংস্থায় নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির জারি করা শংসাপত্র।
১২। আবেদনকারীর ব্যাঙ্ক বা পোস্ট অফিসের অ্যাকাউন্টের প্রমাণ এবং ব্যাঙ্ক/পোস্ট অফিস কর্তৃপক্ষের জারি করা ওই অ্যাকাউন্টের বিবরণ।
১৩। আবেদনকারীর নামে ভারতে থাকা বিমা সংস্থার পলিসির কাগজ।
১৪। আবেদনকারীর নামে থাকা বিদ্যুৎ বিল।
১৫। আবেদনকারীর নামে যদি আদালত বা ট্রাইবুন্যালে কোনও রেকর্ড থাকে, তার নথি।
১৬। কর্মচারী ভবিষ্য তহবিল/ সাধারণ ভবিষ্য তহবিল/ পেনশন/ এমপ্লয়িজ স্টেট ইনসিয়োরেন্স কর্পোরেশন দ্বারা অনুমোদিত ভারতে কর্মসংস্থানের নথি।
১৭। আবেদনকারীর কাছে এ দেশের স্কুল পাস সার্টিফিকেট থাকলে, সেটি।
১৮। এ দেশে স্কুল/কলেজ/ বিশ্ববিদ্যালয়/ সরকারি প্রতিষ্ঠানের দেওয়া শিক্ষাগত যোগ্যতার শংসাপত্র।
১৯। পুরসভার দেওয়া ট্রেড লাইসেন্স।
২০। বিয়ের শংসাপত্র।

সঙ্গে লাগবে হলফনামাও। এর মধ্যে রয়েছে—

এ দেশের নাগরিকত্ব চেয়ে আবেদনের সময়ে আবেদনকারীর বর্তমান ঠিকানা। পাশাপাশি যে দেশ থেকে এসেছেন, সেই দেশে শেষ যেখানে ছিলেন সেখানকার ঠিকানা।

পাশাপাশি, তিনি কোন ধর্মের তা-ও জানাতে হবে হলফনামায়। ওই হলফনামায় ম্যাজিস্ট্রেট বা বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের সই ও সিল থাকতে হবে।

_______

Disclaimer – সঠিক তথ্য নির্ভুল ভাবে মানুষের কাছে পৌঁছে দেবার জন্য তারকেশ্বর টিভি এই আর্টিকেল টিতে কোন রকম এডিট করেনি। 

এই মুহূর্তে

আরও পড়ুন