তারকেশ্বর TV: শিয়ালদহ-আপ পদাতিক এক্সপ্রেসে বিহারের এক মহিলার গর্ভে এক কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। রমজানে ঈদ উদযাপন করায় আনন্দে মেতে ওঠে পরিবার। কলকাতা থেকে কোচবিহারগামী পদাতিক এক্সপ্রেসে বাড়ির দিকে রওনা দিয়েছিলেন ওই দম্পতি। অপ্রত্যাশিতভাবে ট্রেনে থাকা অবস্থায় বাবলি বিবির প্রসব বেদনা ওঠে। সহযাত্রীরা রেল কর্তৃপক্ষকে এই উন্নয়নের কথা অবহিত করেছিলেন।
মুর্শিদ আলি সপরিবারে রমজানে ঈদ উদযাপন করেছেন অনেকটা আনন্দের সঙ্গে। মঙ্গলবার ভোরে ট্রেনে কন্যা সন্তানের জন্ম দেন তাঁর স্ত্রী বাবলি। জেনারেল কামরায় বেহার থেকে আসা পরিবারের নতুন সদস্যকে স্বাগত জানাতে পেরে আনন্দে মেতে ওঠেন পদাতিক এক্সপ্রেসের যাত্রীরা। সহযাত্রী ও রেলওয়ের মেডিক্যাল টিমের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এই দম্পতি।
সোমবার রাতে শিয়ালদহ থেকে আপ পদাতিক এক্সপ্রেসে কলকাতা থেকে বিহারে ফেরেন বাবলি বিবি ও মুর্শিদ আলি। তারা জেনারেল কম্পার্টমেন্টে বসেছিলেন। ট্রেন তখন মাঝপথে, এমন সময় অপ্রত্যাশিতভাবে প্রসব যন্ত্রণায় ভেঙে পড়েন বাবলি বিবি। খবরটি দ্রুত রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে তাদের সহযাত্রীরা জানান। মালদহে পৌঁছে রেল হাসপাতালের একটি মেডিক্যাল টিম এসে নিরাপদে সন্তান প্রসব করান। মা ও সন্তান দুজনেই সুস্থ আছেন।
মুর্শিদ বলেন, ‘আমার স্ত্রী বাবলী বিবি গর্ভবতী ছিলেন। ডাক্তার আগেই ভেবেছিলেন ঈদের পর বাচ্চা আসবে। তাই আমরা খুব একটা চিন্তিত ছিলাম না। যাইহোক, ভোরের দিকে, বাবলি প্রসব বেদনা অনুভব করতে শুরু করে। তখন অন্য সবাই বগিতে ঘুমিয়ে ছিল। সহযাত্রীরা জানতে পেরে হয়ে পড়েন। রাতের অন্ধকারে ট্রেনটি দ্রুতগতিতে রামপুরহাট স্টেশনের পাশ দিয়ে যাচ্ছিল। পরের গন্তব্য মালদা টাউন তখনও ঘণ্টা দুয়েক দূরে।
তিনি বলেন, “আমি যখন অজানার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলাম, সহযাত্রী আমার স্ত্রীর কাছে এসে তাকে আশ্বস্ত করে বলেছিলেন, মা, চিন্তার দরকার নেই। একটু সহ্য করো। সাড়ে পাঁচটার কিছু আগে মালদহে যখন ট্রেন এল, তখন দেখলাম ডাক্তার ও নার্স সবাই হাজির। সদ্যোজাতের আর্তনাদ যখন মুর্শিদের কানে পৌঁছল তখনও ভোর হয়ে গেছে। সহযাত্রীদের অভিনন্দনে তিনি অভিভূত।
পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র জানিয়েছেন, মালদহের ডিভিশনাল হাসপাতালে কোনও যাত্রী ফোন করলে সঙ্গে সঙ্গে খবর দেওয়া হয় মালদার বিভাগীয় হাসপাতালকে। পরিস্থিতি কঠিন ছিল, কিন্তু মালদা রেলওয়ে হাসপাতালের চিকিৎসকদের সঙ্গে মেডিক্যাল টিম দক্ষতার সঙ্গে পুরো প্রক্রিয়াটি সামলে নেন।
সাধারণ শ্রেণির ঐ কামরার মধ্যই শিশুটির নাড়ি কেটে ফেলা হয় এবং পর্যবেক্ষণের জন্য মালদা মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করার আগে মা ও শিশু উভয়কেই প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হয়। তিনি বলেন, “পূর্ব রেলওয়ের মেডিকেল টিম পদাতিক এক্সপ্রেসে এই ঘটনায় প্রশংসনীয় কাজ করেছে। এবং দম্পতির সহযাত্রীরাও দারুন সহায়তা প্রদান করেছেন। রেল তাঁদের এই প্রচেষ্টাকেও স্যালুট জানায়”।
________