Homeহুগলীমানকুন্ডুর স্টেশন কাহিনী ও ইতিহাস

মানকুন্ডুর স্টেশন কাহিনী ও ইতিহাস

স্টেশন তৈরি হওয়ার আগেই এখানে ট্রেন থামত

তারকেশ্বর TV: ১৮৫৪ সালের ১৫ অগস্ট থেকে হাওড়া থেকে হুগলি স্টেশন পর্যন্ত ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছিল। মানকুন্ডু স্টেশন এই শাখায় কিছু বছর পরে তৈরি হয়েছিল। তবে, মানকুন্ডু স্টেশন তৈরি হওয়ার আগেই এখানে ট্রেন থামত এক জনের জন্য। অর্থাৎ, টেনে থামানো হত।

এখনও স্টেশনের পাশেই একটি রাজবাড়ি দেখা যায়। সবাই মানসিক রোগীদের হাসপাতাল হিসেবে চেনেন। রাজবাড়িটি ছিল খ্যাতিমান ব্যবসায়ী গৌর খাঁয়ের। রেললাইন বসার আগে লাগোয়া কয়েক বিঘা জমিতে তিনি একটি মহান বাড়ি, বাগান, জলাশয় এবং অন্যান্য নির্মাণ করেছিলেন। ব্যবসা চালানোর জন্য কলকাতায় যেতেন ট্রেনে। তাঁর শখ-সৌখিনতা সামলাতে অনেক কাজের লোকজন ছিল।

রেলপথ চালু হলে তিনি ট্রেনের প্রথম শ্রেণী কামরায় যাত্রা করতেন। তখন মানকুন্ডু স্টেশন ছিল না। চন্দননগরের পরে ভদ্রেশ্বর স্টেশন। কিন্তু তিনি মানকুন্ডু থেকে উঠতেন। তাই একজন কর্মচারীকে চন্দননগরে পাঠাতেন। তিনি সেখানে ট্রেনে চাপতেন। মানকুন্ডু এলে চেন টেনে ট্রেন থামালে বাবু গৌর খাঁ উঠতেন।

এই জন্য প্রতিদিন অনেক বেশি টাকা দিতে হত তাঁকে। অডিটের সময় এই বিষয়টি রেলওয়ের কর্মকর্তাদের নোটিশ করেন। তারপর তারা  সরেজমিনে দেখতে এসে মানকুন্ডু স্টেশন তৈরির ব্যাপারটি অনুমোদন করেন। গৌর খাঁয়ের জমিতেই মানকুন্ডু স্টেশন গড়ে ওঠে। জমিদান ছাড়াও এই স্টেশন তৈরিতে অন্যান্য সাহায্যও করেছিলেন গৌর।

রেললাইন স্থাপনের পরে ঘোড়ার গাড়ি বাড়ি পর্যন্ত যেতে পারত না নীচে গলাপোল হয়ে য়াওয়ায়। কিন্তু মেয়ের বিয়ের সময় জামাই মাথা নিচু করে প্রথম শ্বশুরবাড়ি আসবেন, এটি গৌরের জন্য কিছুটা অস্বস্তিকর। তাই তিনি রেলকে একটি চিঠি দেন এবং বলেন যে, সন্ধ্যা থেকে পরের দিন সকাল পর্যন্ত মূল রাস্তার উপরে রেললাইন খুলে দিতে হবে।

কথামত অনেক টাকা খরচ করে তা খুলিয়েছিলেন। বিলাসে গা ভাসিয়ে এই মানুষ্টিই শেষ জীবনে নিঃস্ব হয়ে যান।

________

এই মুহূর্তে

আরও পড়ুন