Homeপাঁচমিশালিঅফিস খুলে শেখানো হচ্ছে প্রতারণার নানা কৌশল। সাবধান হতে জানুন

অফিস খুলে শেখানো হচ্ছে প্রতারণার নানা কৌশল। সাবধান হতে জানুন

চিকিৎসকের কন্টাক্ট নম্বর সার্চ ইঞ্জিনের মাধ্যমে জোগাড় করেন

তারকেশ্বর TV: কলকাতার এক দম্পতি ইন্টারনেটের মাধ্যমে মানালির একটি হোটেলের ঘর রিজার্ভ করে রেখেছিলেন। টাকা দেওয়ার পর তারা কনফার্মেশন ও পেয়ে যান। হোটেলে পৌঁছে তাঁদের জানানো হয়, তাঁদের নামে কোনও রিজার্ভেশন নেই। আরও তদন্তে জানা গেছে যে একটি সাইবার ক্রাইম গ্রুপ অনলাইনে মিথ্যা হোটেল রুম বুকিং দিয়ে লোকদের প্রতারণা করছিল।

কলকাতার এক নামী চিকিৎসকের কন্টাক্ট নম্বর সার্চ ইঞ্জিনের মাধ্যমে জোগাড় করেন এক ব্যক্তি। ওই নম্বরে ফোন করার পর ওই ব্যক্তিকে একটি লিঙ্ক দেওয়া হয় এবং রেজিস্ট্রেশনের জন্য ১০ টাকা জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। টাকা পাঠানোর পর একটি ওটিপি পাওয়া যায়। এরপর ওই ব্যক্তির কাছে ফোনে ওটিপি চাওয়া হয়। ওটিপি দেওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের টাকা উধাও হয়ে যায়। সম্প্রতি অর্থ চুরির এই পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছে সাইবার অপরাধীরা।

এক তরুণ ভদ্রলোক কলকাতার উপকণ্ঠে একটি আবাসনের কাছে এসে দরজায় কড়া নাড়েন। একটি অনলাইন শপিং কোম্পানির ডেলিভারিম্যান পরিচয় দিয়ে বাড়িওয়ালার হাতে একটি প্যাকেট তুলে দেন তিনি। বাড়িওয়ালা বিভ্রান্তি প্রকাশ করে বলেন, তিনি অনলাইনে কোনো কেনাকাটা করেননি। জবাবে ডেলিভারিম্যান তাকে জানান যে অর্ডারটি বাতিল করতে হবে এবং একটি যোগাযোগের নম্বর সরবরাহ করতে হবে। ওই নম্বরে ফোন করে বাড়িওয়ালাকে জানানো হয়, অর্ডার আসলেই বাতিল করা হচ্ছে। এরপর ডেলিভারিম্যান প্যাকেটটি নিয়ে চলে যান। কিছুক্ষণ পর ওই ব্যক্তির মোবাইলে একটি ওটিপি আসে। ফোনের অপর প্রান্তে থাকা এক ব্যক্তি অর্ডার বাতিলের জন্য প্রয়োজনীয় দাবি করে ওটিপির অনুরোধ করেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত ওটিপি দেওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই বাড়ির মালিকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে কয়েক হাজার টাকা উধাও হয়ে যায়।

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে সাইবার অপরাধের তথ্য বিশ্লেষণ করে সিআইডি তিনটি নির্দিষ্ট পদ্ধতির ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়েছে বলে চিহ্নিত করেছে। ব্যাঙ্ক অফিসার বা বেসরকারি মোবাইল ফোন পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থার প্রতিনিধি পরিচয় দিয়ে ফোন করে টাকা হাতানোর কৌশল এখন আর কাজে আসে না।  গত এক বছরে বকেয়া বিদ্যুৎ বিল দাবি করে মেসেজের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের অসংখ্য অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে মানুষ এখন এই কৌশল সম্পর্কে সচেতন। ফলস্বরূপ, সাইবার অপরাধীরা তাদের অবৈধ কার্যক্রম চালানোর জন্য তিনটি নতুন পদ্ধতি তৈরি করেছে।

তদন্তে জানা গিয়েছে, এই চক্র মূলত উত্তর ভারতের তিনটি রাজ্যের নির্দিষ্ট কিছু অঞ্চলে পরিচালিত হচ্ছে। এই রাজ্যগুলির মধ্যে রয়েছে রাজস্থানের ভরতপুর, পাঞ্জাবের জলন্ধর এবং হরিয়ানার নুহ। আগে ঝাড়খণ্ডের জামতাড়া সাইবার ক্রাইমের রাজধানী হিসেবে পরিচিত থাকলেও সাইবার ক্রাইম বিশেষজ্ঞরা এখন জামতাড়ার গ্যাংকে অতীতের বিষয় বলে মনে করেন। উল্টে ভরতপুরে মোটা অঙ্কের পারিশ্রমিকের বিনিময়ে অফিস প্রতিষ্ঠা করে প্রতারণার নানা পদ্ধতি শেখাচ্ছেন তারা।

সিআইডি-র এক আধিকারিক জানিয়েছেন, গত অর্ধ বছরে ধরা পড়া সাইবার চক্রের বেশিরভাগই উত্তরের রাজ্যগুলিতে কাজ করছে। তারা তরুণদের নতুন পদ্ধতি সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। এ ছাড়া, নামী রেস্তরাঁর নামে ভুয়ো ওয়েবসাইট খুলে টাকা হাতানোর চক্রও সক্রিয় হয় উৎসবের সময়ে। লিঙ্ক পাঠিয়ে খাবারের অর্ডার দিতে বলা হয়। সেই লিঙ্কে টাকা পাঠালেই তা আত্মসাৎ করা হয়। খাবার কখনো ডেলিভারি হয় না।

হোটেল রুম বা রেস্তোরাঁর খাবারের জন্য নিরাপদ অনলাইন বুকিং নিশ্চিত করতে বিশেষজ্ঞরা বিভিন্ন উৎস থেকে ওয়েবসাইটের সত্যতা যাচাই করার পরামর্শ দিচ্ছেন। কোনও অনলাইন অর্ডার বাতিল করার ক্ষেত্রে, আপনার ফোনে ওটিপি পাওয়ার সময় অবশ্যই সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।

________

Latest news

Related news